শুধু একটি দুটি নয়, অসংখ্য রাত্রি নেমেছে শহরের বুকে, কোটি প্রানে বেঁচে থাকার গান বেজে চলেছে নিয়মিত। একটা আকাশ আপন হয়ে উঠে ধীরে ধীরে। একাকীত্বের চাদরে মোড়ানো কোলাহল।
একেকটি ভোর আসে, বৃষ্টি ভেজা কাশফুলের মতো পবিত্র হয়ে। সকল সতেজ অনুভুতির মৃত্যু হয় দুপুরের প্রখর রোদে।
এসব অনুভুতি আর প্রেমের প্রত্যাখান ছেড়ে আমি নৌকাডুবির গল্প শুনি, জাহাজের ছাদে দাঁড়িয়ে আকাশ ছুয়ে দেখি। মেঘেদের শহরে হেটে বেড়াই স্বপ্নের মতো। আমার স্বপ্নের মৃত্যু হয় পাখির মতো, পোকামাকড়ের মতো, মাকড়সার জালের মতো অনিশ্চিয়তায় ভরে উঠে সব। বর্ষার জলের মতো থৈথৈ করতে থাকা ভাবনারা পথ হারায়। নদী, খাল, বিল পেরিয়ে ঘরের উঠোনের ছোট্ট ডোবায় গিয়ে ঠাই মিলে। মশামাছির জন্মস্থানে পরিনত হয়। পরিবেশের ক্ষতি না হলেও, ক্ষতি হয় জনজীবনে। অপ্রয়োজনীয় ক্ষতিকর হয়ে উঠি মানুষের জীবনে।
তবু আমি থেমে থাকিনা, শীতের কুয়াশার সকাল উপেক্ষা করে রাস্তায় নামি। সাবধানে চলতে থাকি কঠিন পথ। অন্ধকারে জন্ম নেয়া ভয়ের সাথে যুদ্ধ করি, একটা আলোকিত ল্যাম্পপোস্টের আশায়।
আমি মানুষের সাথে থাকি, তবুও বাতাসের মতো অস্পষ্ট হয়ে উঠে আমার অবয়ব। আমি নিজেকেই আবিস্কার করতে পারিনা কখনো কখনো।
ঝড়ের মতো প্রলয়ংকরী হয়ে উঠে দীর্ঘশ্বাস; মানুষের মাঝে বেঁচে থেকেও মানুষের মতো হয়ে উঠতে পারিনি বলেই আমার দীর্ঘ জীবনের অপূর্ণতার দীর্ঘশ্বাস আরোও দীর্ঘ হয়!
আমার গল্পের কোনো শিরোনাম থাকেনা, কোনো চুম্বক শব্দ থাকেনা, কোনো বাক্য নেই সুচিন্তিত। তবু এ গল্প হয়ে উঠে নিশ্চুপ এক মহা সমুদ্র। যার উত্তাল ঢেউ কখনো কারো চোখেই পড়েনা। কোনো নাবিক পথ হারায়না। কোনো জাহাজ তার গতিসীমায় পরিবর্তন আনেনা। কিংবা এ মহাসমুদ্রের জলরাশি কখনো কারো জন্য বিপদজনক হয়ে ধরা পড়েনি। এ এক অকল্পনীয় অধরা অমিমাংসিত সমীরণ হয়ে পড়ে থাকে ধুলো জমা বইয়ের বায়ান্নতম পৃষ্ঠায়।
এ শহর চলতে থাকে নিয়মিত নিজস্ব নিয়মেই, জন্ম দিয়ে সহস্র প্রানের হাজারো অমিমাংসিত সমীকরণের...
🖋️শাকিল আহমেদ
🗓️ ০২ জুলাই ২০২৪